ফরজুন আক্তার মনি,সম্পাদক ও প্রকাশক(দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ নিউজ টিভি. কম)
অ’ভিনেত্রী শাহনাজ খুশির বাসার কাজের সহযোগী কুলসুম। দীর্ঘ দিন তিনি খুশির বাসায় কাজ করেছেন। অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর অ’পারেশনের জন্য সম্প্রতি কুলসুম হাসপাতা’লে ভর্তি হন। অ’পারেশন শেষে আর পৃথিবীর আলো দেখেননি তিনি। না ফেরার দেশে চলে গেছেন সবাইকে ছেড়ে। অ’ভিনেত্রী শাহনাজ খুশি কুলসুমের মৃ’ত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
কুলসুমের মৃ’ত্যুতে জনপ্রিয় অ’ভিনেতা চঞ্চল চৌধুরীর হৃদয় ভা’রী হয়ে উঠেছে। সেই দুঃখ কিছুটা প্রকাশ করলেন ফেসবুক স্ট্যাটাসে। চঞ্চল চৌধুরীর সেই স্ট্যাটাসটি হুবহু র পাঠ আলোকিত বাংলাদেশ নিউজ টিভি .কম এর পাটকদের জন্য তুলে ধ’রা হল- কুলসুম জানতো, আমি গরম গরম পরোটা আর ডিম ভাজি পছন্দ করি, কুলসুম জানতো আমি চায়ে কতটুকু চিনি খাই, কুলসুম জানতো আমা’র পানির গ্লাসে কতটুকু ঠাণ্ডা পানি মেশাতে হবে…..
কুলসুম আমাকে ভাইয়া ডাকতো….. অসম্ভব মায়া আর ভালোবাসা ছিলো আমা’র প্রতি। কুলসুম আমা’র আপন কেউ ছিলো না…কিন্তু সে ছিলো আপনের চেয়ে আপন। কুলসুম,অ’ভিনেত্রী শাহনাজ খুশীর বাসায় দীর্ঘদিন ওর কাজের সাহায্যকারী হিসেবে ছিল। খুশী কুলসুমকে নিজের বোনের মতই আদর করতো…. একটু স্বচ্ছল জীবন যাপনের আশায় কয়েক বছর সৌদি আরবে কাজ করে দুই সপ্তাহ আগেই দেশে ফিরেছিল। যে কয় বছর কুলসুম সৌদিতে ছিল,নিয়মিত খুশীর সাথে যোগাযোগ রাখতো,আমা’র পরিবারের খোঁজও নিত খুশীর কাছ থেকে।
কতটা দ্বায়িত্বশীল,সহ’জ সরল ভালো মানুষ হলে, এরকম প্রিয় মানুষ গুলোকে মনে রাখা যায়,কুলসুম তার প্রমাণ। বেশ কয়েক বছর আগে,দেশে থাকতে, কুলসুম অ’সুস্থতার কারণে খুশীর বাসায় কয়েকদিন আসতে পারেনি। খুশীর সাথে আমিও ওর বাসায় ওকে দেখতে গিয়েছিলাম। কুলসুম তখন বিশ্বা’স করতে পারেনি যে,আমি ওকে দেখতে ওর বাসায় যাবো… দেশে ফিরে আসার পরও সে খুশীর বাসায় দেখা করতে এসেছিল সবার সাথে….সামনের মাস থেকে আবার খুশীর বাসায় কাজ শুরু করবে এমনটাই কথা ছিল…. কিন্তু আজ সকালে খুশী আমাকে ফোন করে জানালো, কুলসুম নেই…… আমাদের কাউকে না জানিয়েই একটা ছোট্ট অ’পারেশনের জন্য হাসপাতা’লে ভর্তি হয়েছিল কুলসুম।অ’পারেশনের পর আর জ্ঞান ফেরেনি কুলসুমের… আজ সকালে সে পরপারে চলে গেল।
অনেক আপনজনের মৃ’ত্যুও আমাকে এতটা ব্যথিত করেনি। সংবাদটা শোনার পর শুটিং এর কাজে বের হয়ে পড়ি… গাড়িতে বসে বার বার কুলসুম এর মুখখানা ভেসে উঠছিল চোখের সামনে,কানে বাঁজছিল ওর মুখের ‘ভাইয়া’ ডাক। মনের অজান্তেই বার বার চোখ ভিঁজে যাচ্ছে….. লাইট…ক্যামেরা… এ্যাকশান…কোনো কিছুই আমাকে কুলসুমের মুখটা ভুলতে দিচ্ছে না… কুলসুমের জন্য আম’রা কিছুই করতে পারলাম না… খুব গো’পনে, ভ’য়ে কুলসুম আমাদের কাছ থেকে পালিয়ে গেল চিরতরে।
আমি শুটিং সেটে বসে স্পস্ট দেখতে পাচ্ছি দিব্য, সৌম্য,বৃন্দাবনদা আর খুশীর চোখের জল….. তাহলে কী’ কুলসুমকে আম’রা বেশি ভালোবাসতাম, নাকি কুলসুম আমাদেরকে???? ক্ষমা চাই কুলসুম…. তোমাদেরকে আম’রা কখনোই এতটা ভালোবাসতে পারি না…!! যতটা তোম’রা আমাদের বাসো…..!! এবার তুমি শান্তিতে ঘুমা’ও কুলসুম।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি