এমদাদুল হক এমদাদ,ঢাকা থেকে। ।
প্রখ্যাত লেখক, সাংবাদিক ও কলামিস্ট আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী চিত্রনায়িকা পরীমনিকে হায়েনা গোষ্ঠীর হাত থেকে বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক আবেদনে এ আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। পরীমনির সঙ্গে যা করা হচ্ছে, তাকে সংশ্লিষ্টদের ক্ষমতার অপব্যবহার বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তার মতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে যেহেতু নারীর ক্ষমতায়ন শুরু হয়েছে, সেজন্যই তার প্রতি এই আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
লন্ডন প্রবাসী এই প্রবীণ সাংবাদিক আবেদনে লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে এটি শুধু তার একার আবেদন নয়। বরং দেশের প্রশাসন এবং একটি বিত্তশালী গোষ্ঠী এবং মিডিয়া গোষ্ঠী মিলে যেভাবে ষড়যন্ত্র করে ২৮ বছরের এক তরুণীকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করার পাঁয়তারা করছে, সেক্ষেত্রে এই আবেদন সচেতন নাগরিক সমাজের।
তার মতে, দুই চার জন র্যা ব কিংবা পুলিশ সদস্য গিয়েই পরীমনিকে গ্রেপ্তার করতে পারতো। কিন্তু আয়োজন দেখে মনে হয়েছে ভয়ংকর কোনো ডাকাতকে গ্রেপ্তারের জন্য এক যুদ্ধযাত্রা। আবার গ্রেপ্তারের পর থেকেই এই তরুণীর বিরুদ্ধে নানা স্ক্যান্ডাল ছড়ানো হচ্ছে। সুতরাং বোঝাই যায়, উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোনো একটি মহল থেকে এগুলো করা হচ্ছে। তার মানে বিচারের আগেই বিচার। এমনকি চয়নিকা চৌধুরীর মতো একজন প্রখ্যাত নাট্যকারকে অহেতুক রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে তার চরিত্রে কালিমা লেপনের চেষ্টা করা হয়েছে। এগুলো ক্ষমতার বাড়াবাড়ি। আর এগুলো চলতে থাকলে নাগরিকদের স্বাধীনতা বিপন্ন হবে।
তিনি বলেন, বোট ক্লাবের ঘটনার পর সহজেই আসামিরা যে জামিন পেয়ে গেল তার রহস্য কী? প্রশাসনের একাংশকে বশ করে এই শক্তিশালী মহলটি যে এই ঘটনাগুলো সাজিয়েছে তা বুঝতে কি কষ্ট হওয়ার কথা? তার ওপর মিডিয়ায় প্রচার। সিটি ব্যাংকের এমডি মাসরুর আরেফিনের বিবৃতি থেকেই বোঝা যায় এই প্রচারগুলো সত্য নয়।
প্রথিতযশা এই সাংবাদিক লিখেছেন, পরীমনি নায়িকা, নানাবিধ পুরুষের সঙ্গে তার সম্পর্ক থাকতেই পারে। সেটা কি অপরাধ? আমার সবিনয় জিজ্ঞাসা- দেশের চলচ্চিত্র জগতের সম্ভাবনাময় এই তরুণীর জীবন আদালতে বিচার হওয়ার আগেই যেভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হলো তার দায়িত্ব কে নেবে? আদালতের বিচারে সে যদি দোষী সাব্যস্ত হয়, সেক্ষেত্রে তার শাস্তি নিয়ে কারোরই আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু একজন তরুণীকে নিয়ে যা করা হচ্ছে তা শুধু নারী সমাজের অপমান নয়, মানবতার অপমান। নাগরিক স্বাধীনতার ওপর একটি ভয়ংকর থাবা।
আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী তার আবেদনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়ে লিখেছেন, শেখ হাসিনার শাসনামলেই বাংলাদেশে নারীদের ক্ষমতায়ন শুরু হয়েছে। আর সে কারণেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সবিনয় আবেদন, তিনি যেন পরীমনির ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করেন। বিচারের হাত থেকে তাকে রক্ষা করতে বলছি না। বরং হায়েনা গোষ্ঠীর হাত থেকে তাকে বাঁচানোর জন্য অনুরোধ করছি। আজ পরীমনির সঙ্গে যা হচ্ছে তা যে দেশের অন্য আরেকজন নাগরিকের ক্ষেত্রে করা হবে না, তার নিশ্চয়তা কী?
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি