মোঃ আলাল মিয়া, নবীগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
নবীগঞ্জ সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. সফর আলীসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে অর্থ কেলেঙ্কারীসহ নানা অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মহিউদ্দিন। গত ১৫ জুলাই নবীগঞ্জ সরকারি কলেজের ১২ জন শিক্ষকের পক্ষ থেকে ইউএনওর কাছে নবীগঞ্জ সরকারি কলেজের আর্থিক অনিয়মের ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করা হয়। এতে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা বেতন সঠিকভাবে শিওর ক্যাশের মাধ্যমে পোস্টিং দেওয়া হয়নি, কয়েক বছর ধরে বেতন আদায়ের ক্ষেত্রে বেতন রেজিস্ট্রার বহি রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়নি। এ ছাড়া নানা অভিযোগ তুলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়।
অভিযোগকারী শিক্ষকেরা হলেন মোজাম্মেল আলী শিকদার, মো. শাহিন মিয়া, মাসুদ মিয়া, ফরিদ আহমদ, মোদাচ্ছির আলী, মইনুল ইসলাম জাকির, সুব্রত কুমার সাহা, আবুল কাশেম, ফাতেমা তুজ জহুরা, সালমা জাহান চৌধুরী, খালেদা বেগম ও মহিমা আক্তার। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উত্তম কুমার দাশকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাদেক হোসেন, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নুসরাত ফেরদৌসি। এরপর শুরু হয় তদন্ত। তদন্ত শেষে গত ৩১ আগস্ট ইউএনওর কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদনে নবীগঞ্জ সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. সফর আলীসহ আরও অন্তত ১৮ কর্মচারীর বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলা, অর্থিক অনিয়ম, প্রশাসনিক অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানায়। অন্য কর্মচারীরা হলেন হিসাব সহকারী সুনাম উদ্দিন, ল্যাব সহকারী জ্যোতিষ রঞ্জন সরকার, নিম্নমান সহকারী বিন্দু ভূষণ বৈদ্য, খণ্ডকালীন কম্পিউটার অপারেটর নয়ন মনি সরকার, ফজলে এলাহী মো. ফরহাদ, মো. মিছবাহ উদ্দিন, শাহ ফুয়াদ ইমাম, মোজাম্মেল আলী শিকদার, শাহিন মিয়া, দুদু মিয়া, আবুল কাশেম, হাবিবুর রহমান, অসীম কুমার রায়, মো. মোদাচ্ছির আলী, কৃপেশ চন্দ্র দেব, রেজাউল আলম, রুপেশ চন্দ্র দাশ।
জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. সফর আলী সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে, সব মিথ্যা ও ষড়যন্ত্র।’ ইউএনও শেখ মহি উদ্দিন বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী কলেজের সভাপতি আমি। একাধিকবার সভা আহ্বান করার জন্য বললেও অধ্যক্ষ সভা ডাকেননি। আমার অনুমতি ছাড়া মনগড়া কার্যক্রম পরিচালানা করেছেন অধ্যক্ষ। তাই অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। ইতিমধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা মাধ্যমিক অধিদপ্তরের কাছে বিভিন্নভাবে দুর্নীতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, নবীগঞ্জ কলেজে অধ্যক্ষ পদায়ন ও কলেজের আর্থিক বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে সরকারি অডিটের ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি