ষ্টাফ রিপোর্টার।
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার বড়দেশ আসআদুল উলূম কওমি মাদ্রাসার দখলীয় জায়গায় মাটি ভরাট করে জবর দখলের চেষ্টার প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় মাদ্রাসার দুই শিক্ষক গুরুতর আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ১১জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পরে কানাইঘাট থানাপুলিশ ২জনকে গ্রেফতার করেছে।
এদেকে, কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ তাজুল ইসলাম পিপিএম দুপুর ১টার দিকে কানাইঘাট দারুল উলূম মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন। এসময় মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম আল্লামা আলিম উদ্দিন দূর্লভপুরী সহ আলেম উলামা ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান। আলেম উলামা হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবী করেন এ সময়।
জানা যায়, মাদ্রাসার জায়গা জোর পূর্বক ভাবে জবর দখলের প্রতিবাদ করতে গিয়ে হামলাকারীদের হাতে মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আব্দুল মালিক (৩৫), মাওলানা শুয়াইব আহমদ (৩০) গুরুতর আহত এবং মাদ্রাসায় হামলা চালিয়ে ছাত্র-শিক্ষকদের অপদস্ত করার প্রতিবাদে বিকেল সাড়ে ৩টায় কওমি মাদ্রাসার ছাত্র শিক্ষক ও এলাকাবাসীর ব্যানারে দারুল উলূম মাদ্রাসা থেকে কানাইঘাট বাজারে এক বিরাট বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিল পরবর্তী বাজার ত্রিমোহনী পয়েন্টে প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এ ঘটনার সাথে জড়িত দুষ্কৃতিকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবী জানান কওমি মাদ্রাসার আলেম উলামা বৃন্দ।
মাদ্রাসার শিক্ষক ও ছাত্রদের উপর হামলার বিষয়টি সকাল বেলায় এলাকার মসজিদে মাইকে জানানোর পর এলাকার শত শত লোকজন মাদ্রাসা প্রাঙ্গনে গিয়ে সমবেত হন। এ সময় তাদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে এ ঘটনার সাথে জড়িতদের বাড়ী ঘরে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলার চেষ্টা করলে এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, আলেম উলামারা তাদের শান্ত করেন।
খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কানাইঘাট থানা পুলিশ মাদ্রাসায় গিয়ে উপস্থিত শত শত লোকজনকে শান্ত করেন এবং সেখান থেকে অবরুদ্ধ অবস্থায় হামলার ঘটনায় ইন্দনদাতা হিসাবে বড়দেশ উত্তর গ্রামে জওয়াহির আলী নামে ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধকে আটক করে নিয়ে আসেন। এছাড়া পুলিশ হামলার ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা আব্দুল কাদির বাদী দায়েরকৃত মামলার আসামী জওয়াহির আলীর পুত্র সিরাজ উদ্দিন (৪০) সিলেট শহর থেকে পুলিশ আটক করেছে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় লোকজনদের কাছ থেকে জানা যায়, মাদ্রাসার একাংশের জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে বড়দেশ উত্তর গ্রামের জওয়াহির আলীর পরিবারের সাথে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের বিরোধ চলে আসছিল। আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার দিকে এস্কেভেটর দিয়ে জওয়াহির আলীর কতেক আত্মীয়-স্বজন মাদ্রাসার দখলীয় পুুকুরে মাটি ভরাটের চেষ্টা করলে মাদ্রাসায় অবস্থানরত কয়েকজন শিক্ষক ও হিফজ বিভাগের ছাত্ররা বাধা দিলে এ হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় মাদ্রাসার মুহতামিম বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃত জওয়াহির আলীর পরিবারের কয়েকজন সদস্য সহ ১১জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।
থানার ওসি মোঃ তাজুল ইসলাম পিপিএম জানান, মাদ্রাসার দায়েরকৃত মামলাটি এফআইআর করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এজাহারভূক্ত ২ আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে বলে তিনি জানান।
এদিকে জওয়াহির আলীর পক্ষের লোকজনের দাবী- তাদের জায়গায় মাটির কাজ করতে গিয়ে মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের হামলায় তাদের পক্ষের ৫ জন আহত হয়েছেন।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি