ফরজুন আক্তার মনি, (সম্পাদক ও প্রকাশক)।।আমি যখন তৃতীয় শ্রেণীতে নতুন তখন বিদ্যালয়ে নতুন একজন শিক্ষক আসেন।সমাজ বই থেকে একটি বড় প্রশ্ন বাড়ি থেকে শিখে আসতে বলেন।রাতে সব বই পড়ে শেষ সমাজ বই হাতে নিয়ে দেখি প্রশ্নে ৪/৫ টা শব্দ অনেক কঠিন। তাই মুখস্থ করতে আমার কষ্ট হয়েছিল।পরের দিন স্কুলে সমাজ ক্লাসে কেউ পড়া দিতে পারেনি। স্যার সবাই কে ৫টা করে সবার হাতে পিটাইলেন।অবশেষে বেত ভেঙে যায়। তখন ভাঙা বেতের পিটুনিতে আমার হাত কেটে যায়। প্রধান শিক্ষক হাত ব্যান্ডেজ করে দিয়েছিলেন।বাড়িতে গিয়ে প্রচন্ড জ্বর উঠে। মা বাবা বললেন আর স্কুলে যেতে হবে না। শুনে মনে অনেক কষ্ট। কয়েক দিন পরে প্রধান শিক্ষক বাড়িতে আসলেন স্কুলে নেওয়ার জন্য।তিঁনি বললেন আজ থেকে আপনার সন্তান আমার সন্তান। মা বললেন তার বাবা স্কুলে যেতে মানা করেছে। আমি স্যারের সঙ্গে স্কুলে যেতে কান্নাকাটি করিলে মা যেতে দেন।আমি ক্লাসে ১ম হওয়ায় হিংসায় কেউ প্রাইভেট পড়ায়নি।নতুন শিক্ষক আবারও বাড়িতে পড়তে দিলেন। সেদিন বললাম,স্যার আমাদের এলাকায় শিক্ষিতদের হার কম,তাই বাড়িতে প্রাইভেট পড়ার সুব্যবস্থা নেই। বিদ্যালয় হলো শিক্ষার রাজ্য।তাই আমাদের কে বিদ্যালয়ে একবার পড়িয়া শুনিয়ে দেন,তাহলে শিখতে সমস্যা হবে না।স্যার বললেন সত্যি বলেছো তো? আমি বললাম হ্যা।বাংলা বই থেকে একটি কবিতা পড়ে শুনালেন এবং বললেন এখন সমস্যা হবে? বললাম না,আমার মুখস্থ হয়ে গিয়েছে।স্যার অবাক হয়ে পড়া নিলেন। শুনে আনন্দিত হয়ে কোলে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের অফিসে গিয়ে বললেন স্যার সে বড় হয়ে গুণিজন হবে এবং বড় ধরনের নেতৃত্ব দিবে।এটাই ছিল শিক্ষা গুরুর দোয়া।এর পর থেকে কোনো দিন পড়ার জন্য পিটুনি খেতে হয়নি।ক্লাসে ভালো ভাবে বুঝিয়ে দিতেন যেনো প্রাইভেট পড়তে হয় না।সেদিনের শাসনে সবার সেরা হতে দ্বিগুণ উদ্দীপনার জন্ম হয়।শিক্ষা গুরুর শাসনে কেউ মরে না,বরং গুনি হতে উদ্দীপনার জন্ম হয়।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি