ফরজুন আক্তার মনি, সম্পাদক ও প্রকাশক।।
পিরোজপুরের কাউখালীতে করোনায় মৃত রেখা আক্তার (৪৫) নামে এক নারীর লাশ দাফনে পরিবার ও স্বজনরা কেউ এগিয়ে আসেননি। বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও এক নারী উন্নয়নকর্মী মিলে লাশের গোসল করিয়ে দাফনের ব্যবস্থা করেন।
শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার উজিয়ালখান গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে ওই নারীর লাশ দাফন করা হয়। মৃত গৃহবধূ ওই গ্রামের সোলায়মান হোসেনের স্ত্রী। তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ১০দিন অসুস্থ ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কাউখালীর উজিয়ালখান গ্রামের এক নারী শুক্রবার দুপুরে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। করোনার ভয়ে স্বজনরাও লাশ ফেলে রেখে গা ঢাকা দেন। অপরদিকে সংক্রমণের ভয়ে প্রতিবেশীরাও কেউ এগিয়ে আসেননি।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাশ পড়ে রয়েছে বাড়িতে। এই খবর নাড়া দেয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদা খাতুন রেখাকে। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে লাশের গোসল করাতে উদ্যোগী হন তিনি। তাকে সহযোগিতা করেন স্বেচ্ছাসেবী উন্নয়ন কর্মী মাহাফুজা মিলি এবং শামীমা আক্তার। রাত ১২টার দিকে কাউখালী উজিয়ালখান গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে জানাজা শেষে ওই নারীর লাশ দাফন করা হয়।
এদিকে ইউএনওর এমন মানবিক দৃষ্টান্তের খবর রাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ ইউএনওকে সাধুবাদ জানান।
কাউখালী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মৃদুল আহম্মেদ সুমন বলেন, করোনায় মৃত নারীর দাফনের ব্যবস্থা করে মানবতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তিনি করোনাকালের শুরু থেকে গর্ব করার মতো কাজ করে চলেছেন। তার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।
কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খালেদা খাতুন রেখা বলেন, এটি মানুষ হিসেবে মানবিক দায়িত্ব। তবে করোনায় কেউ মারা গেলে সংক্রমণের ভয় থাকা ভুল ধারণা। মানুষের সচেতন হওয়া উচিত। আমরা এক কঠিন দুঃসময় পার করছি।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি