ফরজুন আক্তার মনি, (সম্পাদক ও প্রকাশক)।।

আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে এফডিসি। তালা মারা থাকায় শিল্পী সমিতির অফিসকক্ষে প্রবেশ করতে পারেননি সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান। চলমান পরিস্থিতিকে তিনি ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
চেয়ার নিয়ে ইউক্রেন-রাশিয়ার মতোই যুদ্ধ হয়েছে: জায়েদ খান

বুধবার উত্তেজনার মুখে এফডিসিতে পুলিশ পাহারা বাড়ানো হয়। এ সময় পুলিশ বহিরাগতদের এফডিসির ভেতর থেকে বের করে দেয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছিল।

এর আগে চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতিতে জায়েদ খানের সাধারণ সম্পাদকের পদ বৈধ ঘোষণা করে রায় দেন বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

রায় ঘোষণার পরপরই এ রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন নিপুণ আক্তার। সময় সংবাদকে নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেছিলেন তিনি। রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন জায়েদ ও নিপুণ।

হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরপরই জায়েদ খান জানান, বুধবার (২ মার্চ) বিকেলেই তিনি এফডিসিতে যাবেন। এ ঘোষণার পর উত্তাল হয়ে ওঠে এফডিসি।

বিষয়টি নিয়ে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের মতোই এই চেয়ার নিয়ে যুদ্ধ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন জায়েদ খান। ‘আমি খুবই মর্মাহত। এটা যুদ্ধ নয়, এটা নোংরামি। আমি আশা করি, এটার অবসান হোক। আমাদের সংগঠনে যারা আছেন, তাদের প্রতি ভালোবাসা। আমাদের পর করে দেবেন না। আসুন, আমরা একসঙ্গেই কাজ করি। আমরা আপনাদেরই সন্তান, আপনাদেরই ভালোবাসার মানুষ। আমার কোনো ভুলত্রুটি থাকলে সিনিয়ররা ডেকে বলবেন।’

উল্লেখ্য, গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ১৭৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। নিপুণ আক্তার পান ১৬৩ ভোট। এরপর টাকা দিয়ে ভোট কেনাসহ একাধিক অভিযোগ আনেন নিপুণ। পরে জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে শিল্পী সমিতির আপিল বোর্ডে আবেদন করেন নিপুণ। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে করণীয় জানতে আবেদন করেন আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান।

বৈঠকে শেষে জা‌য়ে‌দের প্রার্থিতা বাতিল করে সাধারণ সম্পাদক পদে নিপুণ‌কে বিনা প্রতিদ্ব‌ন্দ্বিতায় জয়ী ঘোষণা করেন বোর্ডের প্রধান ও চলচ্চিত্র নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান। এর পরদিন ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণ পরিষদের বিজয়ীরা শপথ নেন।

নিপুণ‌কে বিনা প্রতিদ্ব‌ন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা এবং নিজের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন চিত্রনায়ক জায়েদ খান। রিটের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনী আপিল বোর্ডের জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। সেই সঙ্গে জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে বিজয়ী ঘোষণার বৈধতা প্রশ্নে রুল জারি করা হয়। এ ছাড়া নিপুণের অভিযোগের বিষয়ে নির্বাচনী আপিল বোর্ডকে সিদ্ধান্ত নিতে সমাজসেবা অধিদফতরের চিঠির কার্যকারিতাও স্থগিত করা হয়।

হাইকোর্টের এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেন নিপুণ। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত করে বিষয়টি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানির জন্য নির্ধারণ করেন। সে পর্যন্ত চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে দুজনের কেউই দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না মর্মে (স্ট্যাটাসকো) আদেশ দেওয়া হয়।