ষ্টাফ রিপোর্টার।
২১ বছর বয়সী বাংলাদেশি যুবক তুহিন আহমেদ সৌদি আরবের একটি খাবারের দোকানে চাকরি করতেন। সততা ও কাজে আন্তরিকতার কারণে দোকান মালিকের আস্থাভাজন ছিলেন তিনি।
অন্য কর্মচারীদের তুলনায় মালিকের বেশি আস্থাভাজন হওয়াই শেষ পর্যন্ত কাল হলো তুহিনের। শুক্রবার দিবাগত (৫ মার্চ) রাত বাংলাদেশ সময় সাড়ে ১২টার দিকে সহকর্মী ইয়েমেনের এক যুবকের হাতে খুন হয়েছেন তিনি।
তুহিন হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের রমজানপুর গ্রামের মৃত তারেক উদ্দিনের ছেলে।
পরিবারের বরাত দিয়ে ইউপি সদস্য রাসেল আহমেদ জানান, সাত-আট বছর আগে তুহিনের বাবা মারা যান। বাবা মারা যাওয়ার পর দুই ছেলেকে নিয়ে বিপাকে পড়েন তাদের মা। একপর্যায়ে জীবিকার তাগিদে তিনি সৌদি আরব পাড়ি জমান।
বছর দেড়েক আগে বড় ছেলে তুহিনকেও সৌদি আরব নিয়ে যান তার মা। সেখানে একটি খাবারের দোকানে কর্মচারী হিসেবে চাকরি নেন তুহিন।
ওই দোকানে আরও তিন কর্মচারী আছেন। সততা ও কাজের প্রতি আন্তরিকতার কারণে তুহিনকে তার মালিক খুব ভালোবাসতেন। গুরুত্বপূর্ণ কাজে তুহিনের ওপরই ভরসা করতেন তিনি। এ কারণে অন্য তিন কর্মচারী তুহিনকে হিংসা করতে শুরু করেন।
শুক্রবার রাতে চার কর্মচারী একসঙ্গে খেতে বসলে একটি তুচ্ছ বিষয় নিয়ে সহকর্মী ইয়েমেনের এক যুবকের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় তুহিনের। একপর্যায়ে ওই যুবক তুহিনের নাকে ও বুকে ঘুষি মারেন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার পর ইয়েমেনের ওই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে সৌদি পুলিশ।
ইনাতগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নোমান আহমেদ বলেন, ‘সকালে আমি নিহতের বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানে তার ছোট ভাই আর চাচারা রয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, তুহিনের মরদেহ দেশে আনা হবে কি না সেটা তার মা সিদ্ধান্ত নেবেন। যদি দেশে আনতে চান তাহলে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।’
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে যেহেতু এখন জেনেছি অবশ্যই খোঁজ নেব।’
পরিবারের সদস্যরা তুহিনের মরদেহ দেশে আনতে চাইলে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন ইউএনও।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি