ষ্টাফ রিপোর্টার।
মৃদুমন্দ বাতাসে ভেসে আসা ফুলের গন্ধে,মাঘ মাস শেষ হতে না হতেই প্রকৃতিতে বইতে শরু করেছে ফাল্গুনের হাওয়া। ঋতুরাজ বসন্ত তার আগমনী বার্তা নিয়ে প্রকৃতির দরজায় কড়া নাড়ছে। বছর ঘুরে প্রকৃতির তার নানা পরিবর্তন পেরিয়ে আবার সেজেছে নতুন রূপে। বসন্তের আগমনে শীতের রিক্ততা ভুলিয়ে ফাগুনের আগুনে মানুষের মন আর প্রকৃতিতে লেগেছে পরিবর্তনের ছোঁয়া। বসন্তের রঙ্গ ও রূপে নিজেকে সাজাতে প্রকৃতি এখন মেতে উঠেছে। প্রকৃতি ধারণ করছে রূপলাবণ্যে ভরা মনোহর পরিবেশ। ফাল্গুনের আগুনে শীতের তীব্র রুক্ষতা কেটে পাতা ঝড়া বৃক্ষগুলির মাথায় দেখা দিয়েছে সবুজ পাতা, কুলি ও ফুল। প্রকৃতিতে বসন্তের সাজ সাজ রব শীতের জীর্ণতা কাটিয়ে ফুলে ফুলে সজ্জিত প্রকৃতি জানান দিচ্ছে বসন্তের আগমনী বার্তা।
সরেজমিনে সুনামগঞ্জ তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মানিগাঁও গ্রামে গড়ে উঠা বাদাঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব প্রয়াত জয়নাল আবেদীন এর শিমুল বাগানে।নতুন কুড়ি ও ফুলে সারিবদ্ধ শিমুল গাছে রঙিন হয়ে আছে।শীতের খোলসে ঢেকে থাকা বাগানের সারিবদ্ধ গাছ গুলি এখন ফুলে ভরপুর।প্রকৃতির আদরমাখা স্পর্শে জেগে উঠেছে,শীতের রুক্ষতা কাটিয়ে প্রকৃতি ফিরে পেতে চলছে ফুল ও সবুজের এক অপরুপ সমাহার যা এনে দিয়েছে বসন্ত। শিমুলের প্রস্ফুটিত হাসিতে শিমুল বাগানে যেন লেগেছে লেলিহান লাল রঙের আগুনের ছোয়া। বসন্তের কোকিলও তার মিষ্টি কুহুতানে মাতাল করতে এসেছে ঋতুরাজ বসন্তের সবুজ- শ্যামল বাংলায়।নিয়ম অনুসারে ছয় মাস অন্তর অন্তর ঋতু বদলায় তার রূপ, রং আর সৌন্দর্য। ছয় পূর্বের প্রকৃতি আর আজকের প্রকৃতির মধ্যে অনেক পার্থক্য। প্রকৃতি নিয়ে স্থানীয় বায়োজ্যেষ্ঠদের কাছে জানা যায় এক ঋতুর আবহাওয়া আর এক ঋতুর ১৫দিন আগেই বিস্তার লাভ করে।তাইতো মাঘ মাসের মধ্যভাগ হতেই প্রকৃতিতে বইতে শুরু করেছিল ফাল্গুনের হাওয়া।শিমুলসহ বিভিন্ন গাছে ফুটতে শুরু করেছে ফুল।বসন্তের বার্তা নিয়ে শিমুল গাছের কলি খাওয়ায় মেতে উঠেছে রাঙ্গা টিয়া।সেই সাথে এ অঞ্চলের আম,জাম সহ বিভিন্ন গাছ গুলতেও দেখা যাচ্ছে মুকুলে ভরপুর।দেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট প্রকৃতির অপরুপ সৌন্দর্যে লীলাভূমি টাঙ্গুয়ার হাওরে চতুর্পাশে সারিবদ্ধ করচ গাছ গুলির পুরাতন পাতা ঝরে পড়ে, নতুন পাতা গজাতে শুরু করেছে। সবুজের সজ্জিত প্রকৃতি যেন অনাবিল আনন্দ ও নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে পরিনত হয়েছে। ইট-পাথরের এই যুগে গ্রামাঞ্চলে বসন্তে প্রকৃতি যেন তার সব সৌন্দর্য উজাড় করে দিয়েছে। নতুন লাল রঙের ফুল ও সবুজ পাতায় চেয়ে গেছে উপজেলার জয়নাল আবেদীন শিমুল বাগান ও টাঙ্গুয়ার হাওরের পরিবেশ।
উল্লেখ্য যে ২০০২ সালে উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব প্রয়াত জয়নাল আবেদীন উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মানিগাঁও গ্রামে বালু আবরিত ৯৮বিঘা অনাবাদী জমি ক্রয় করে বানিজ্যিক ভাবেই এই শিমুল বাগান তৈরী করার জন্য তিনি প্রাথমিক ভাবে চিন্তা করেন।এই চিন্তা থেকেই তিনি এই বাগানে সারিবদ্ধভাবে ৩হাজারের অধিক শিমুলের চারা রোপণ করেছিলেন।
শিমুল বাগানে ঘুরতে আসা সিলেটের কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে কথা হলে তারা বলেন তাহিরপুর শিমুল বাগান দেখতে গেল বছরেও চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু সময়-সুযোগের অভাবে পেরে উঠতে পারিনি। এখন সময় পেয়েছি তাই বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ঘুরতে এসেছি। দীর্ঘপথ অতিক্রম করে এখানে পৌঁছে সব ক্লান্তি ভুলে গেছি।শিমুল বাগান দেখে আসলেই আমরা অভিভূত। সারিবদ্ধ রক্তরাঙা শিমুল ফুল দেখে সত্যি ভাল লাগছে।এ বাগানের সৌন্দর্য দেখে যে কেউ মুগ্ধ হবে।তবে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত থাকায় অনেকটাই ভুগিয়েছে এটুকু পথ আসতে গিয়ে।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি