ফরজুন আক্তার মনি,//সম্পাদকীয় // হবিগঞ্জের নবীগঞ্জের ১২ নং কালিয়ারভাংগা ইউপিতে মান্দারকান্দি গ্রামে অবস্থিত ভূমিহীনে চলছে ত্রাসের রাজত্ব, কেউ মুখ খুললেই ঐ পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ড মেম্বার আঃ হাই ও তার লোকে চালায় নির্যাতন।আশপাশের লোক আনোয়ার মিয়া,আঃ হাবিজ সহ অনেকেই এলাকার শত শত গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সামনে দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ নিউজ টিভি কে জানান,মেম্বারের ভাগনা রুবেল মিয়া ও চাচাতো ভাই আদর মিয়া ভূমিহীনে সারারাত মাদক সেবন ও মাদক বিক্রি করে,গভীর রাতে নারী নিয়ে উন্মাদনায় মশগুল থাকে। তাদের উন্মাদনায় আমাদের ঘুমের সমস্যা হয়, বাচ্চারা ভয় পায়,তাদের নামে একাধিক মামলাও রয়েছে।
মেম্বারের দ্বিতীয় স্ত্রী চাম্পা বেগমের বক্তব্য ঃ- এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সামনে চাম্পা বেগম জানায়, গত ইউপি নির্বাচনে আমার স্বামী ব্যাংক থেকে লোন উত্তোলনের কথা বলে আমার স্বাক্ষর নিয়ে একটি ডিভোর্স লেটার প্রথম স্ত্রী সন্তানদের দেখিয়ে নির্বাচন করেছেন। নির্বাচন শেষে আবার আমাকে নিয়ে ভূমিহীনে সংসার করেন এবং বিভিন্ন মানুষ কে টাকার বিনিময়ে সরকারি ঘরে থাকতে দেন,পরে বাহির হওয়ার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। আমি তার প্রতিবাদ করিলে লাইভে এসে বক্তব্যে বলেন,দেড় বছর ধরে আমার সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন, কিন্তু ডাক্তার পরীক্ষা করলে গত ৪/৫দিন আগেও আমার সাথে ছিলেন, তার প্রমাণ পাবেন এবং প্রয়োজনে আইনগত ভাবে বিচার প্রার্থী হব।এ বিষয়ে সামনের ঘরের ছমির মিয়া,রুহেলা ও সুভা বেগম জানায়,মেম্বার আঃ হাই চাম্পা বেগমের সাথে তালাক হওয়ার পরেও ভরণপোষণ সহ সংসার করেন।গত সপ্তাহে মানুষের কাছ অবৈধভাবে টাকা আনার জন্য তারা দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়ে বিচ্ছিন্ন হয়েছেন।
বিধবা নারী ঝরনার বক্তব্য ঃ- ভূমিহীনের আঃ তাহিদের কন্যা ঝরনা গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সামনে জানায়, আমার স্বামী দুই বাচ্চা রেখে মারা গিয়েছেন,বাচ্চা লালনপালন করার কেউ নেই, আমার বাবাও অনেক গরীব, ভিক্ষা করে বাচ্চা লালনপালন করছি।আমার থাকার কোন ঘর না থাকায়, মেম্বার সাহেবের নিকট কান্নাকাটি করিলে, তিনি ১০ হাজার টাকা আমার নিকট চান,আমি ঋণ করে ১০ হাজার টাকা দেওয়ার পর একটি ঘর আমাকে দেন।কিছু দিন বসবাস করার পরে অন্য লোকজন এসে বের হতে বলে,আমি মেম্বার কে বিষয়টি জানালে,আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করে বলেন নবীগঞ্জ ভূমি অফিসে রেজিস্ট্রারী কর,আমার নিকট আসবে না।আমি গ্রামের মুরব্বি সাবেক চেয়ারম্যান সহ অনেক কে জানিয়েছি,মেম্বার কারো ডাকে সারা না দেওয়ায়, আমি গত ৩১/৫/২৩ খ্রিস্টাব্দ নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছি। অভিযোগটি তুলে আনার জন্য আনমনু গ্রামের বাদল মিয়া সাংবাদিক পরিচয়ে আমাকে ভয়ভীতি দেখায়।
বাজার কমিটির সেক্রেটারির বক্তব্য ঃ- নবীগঞ্জ সদর ইউপিতে অবস্থিত রসুলগঞ্জ বাজার কমিটির সেক্রেটারি ছামাদুল হক চৌধুরী জানান,ভূমিহীনে বসবাস রত রিংকু দাস কে প্রায় ৯ মাস আগে সরকারি ঘর থেকে বের হওয়ার জন্য মেম্বার নির্যাতন চালায়,রিংকু দাস বাজারের ছোটখাটো ব্যবসাহি থাকায় বাজার কমিটিতে বিচার প্রার্থী হয়, আমি কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আঃ মুহিদ কে নিয়ে আপোষ মীমাংসায় সমাধান করে দিয়েছি।দীর্ঘ ৯ মাস পরে মেম্বার আঃ হাই আমার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।মেম্বার প্রভাবশালী থাকায় এলাকার মানুষ কথা বলতে ভয় পায়।আজ শত শত মানুষের উপস্থিতিতেও তার লোকজন আক্রমণ চালিয়েছে।আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার আমার দৃষ্টি গোচর হওয়ায়, আমি তার প্রতিবাদ জানিয়েছি।
সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের বক্তব্য ঃ- নবীগঞ্জের ১২ নং কালিয়ারভাংগা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জানান, মেম্বার আঃ হাই ও তার ভাগনা রুবেল ,চাচাতো ভাই আদর মিয়া বহুদিন ধরে ভূমিহীনে মাদক সেবন, মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে,তাদের নামে একাধিক মামলা রয়েছে এবং ইদানীং যুক্ত হয়েছে নবীগঞ্জ পৌর সভার আনমনু গ্রামের দারগা মিয়ার পুত্র বাদল মিয়া, আশপাশের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে আমার নিকট বিচার প্রার্থী হয়েছে এবং মেম্বার সরকারি ঘর দিয়ে বানিজ্য শুরু করেছে, আমি আপোষ মিমাংসার স্বার্থে উভয় পক্ষ কে বিচারের প্রস্তাব করিলে, আঃ হাই জানায়, আমার বিষয় আমি দেখব, তুমি দেখার কে এবং
প্রায় দুই বছর আগে মেম্বার আঃ হাই তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে ঝামেলা মিটমাট করার কথা বলে, আমার নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা কর্জ নেয়,সেই টাকা অদ্যবদিও ফেরত দেয়নি। আমি অতিষ্ঠ হয়ে তার গোষ্ঠীর মুরব্বিদের নিকট বিচার দেওয়ায়,আমার উপর ক্ষেপে গিয়ে বাদল মিয়া, মোঃ আকলিছ মিয়ার ফেইসবুকে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মানহানিকর বক্তব্য পোস্ট করে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে গুজব ছড়িয়ে আমার ও আমার পরিবারের মানসম্মান হেয় করে যাচ্ছে,বিষয়টি আমার নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমি তার প্রতিবাদ জানিয়েছি।
মুরব্বি গণের বক্তব্য ঃ- লেচু মিয়া,নাইহর মিয়া,কামাল মিয়া,দুলাল মিয়া সহ মুরব্বিরা জানান,সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ইউপি সদস্য আঃ হাই কে ৫০ হাজার টাকা কর্জ দিয়েছিলেন,টাকা ফেরত না পাওয়ায়, মেম্বারের গোষ্ঠীর মুরব্বিদের নিকট বিচার প্রার্থী হন সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, মেম্বার ক্ষেপে গিয়ে চেয়ারম্যান সাহেবের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন এবং মেম্বারের ভাগনা রুবেল ও চাচাতো ভাই আদর মিয়া রাতে মাদক সেবন করে মানুষের ঘুমের বিঘ্ন ঘটায়, মেম্বার কে বললে মেম্বার মানুষ কে উল্টো অত্যাচার করেন।সরকারি ঘর দিয়ে মেম্বার বানিজ্য শুরু করেছেন।
আক্রমণ ঃ- গত ০৬/০৬/২৩ খ্রিস্টাব্দ দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ নিউজ টিভির নিকট এলাকার মানুষের বক্তব্য চলাকালীন অবস্থায় মেম্বারের ভাগনা রুবেল তার লোকজন নিয়ে মানুষের উপর আক্রমণ চালায়,তাত্ক্ষণিক থানায় খবর দিলে,নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ ডালিম আহমেদ একদল পুলিশ নিয়ে ঘটনাটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনেন।
মেম্বারঃ ইউপি সদস্য আঃ হাইয়ের কুকীর্তি ও দুর্নীতির বিষয়ে জানতে চাইলে, তিনি সম্পাদক ও প্রকাশক কে জানান,আমি সরাসরি আপনার সাথে দেখা করতে চাই? তিনি দেখা করতে নবীগঞ্জ শহরের সুনামধন্য দোকান সুগন্ধাতে বাদল সহ একদল বাহিনী নিয়ে এসে তর্জন গর্জন করে বলেন,ভূমিহীনে যা ঘটেছে, তা আমার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়, এসব ঘটনা আমি আমার মতো করে সমাধান করব।এ বিষয়ে কোন বক্তব্য দেব না,আমার ছেলের বিষয়ে কে আপনাকে,কী বলেছে, তার নাম বলেন,তাকে দেখে নেবো।বাদলও মেম্বারের দরদী হয়ে তর্জন গর্জন করে উভয়ই উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল হক চৌধুরী সেলিমের ভয় দেখিয়ে হুমকি দেয়।কথাগুলো বাদল গোপনে রেকর্ড করে, অবশেষে তর্জন গর্জন ও হুমকি ধামকি কেটে শুধু মেম্বারের ছেলের বিষয়ে কথা কাটিকাটি এডিট করে ফেইসবুকে পোস্ট করে। এতে প্রমাণিত হয়েছে, ফেইসবুকে গুজব ছড়ানোর নাটের গুরু বাদল এবং এই গ্রুপের একজন সদস্য।ঐ এলাকার লোকজন জানায়,বাদল নিজেকে অল বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার দাবি করে আমাদের এলাকায় চাঁদাবাজির চেষ্টা করেছে।
এসিল্যান্টের বক্তব্য ঃ- ভূমিহীনের ত্রাসের রাজত্ব নিয়ে নবীগঞ্জের এসিল্যান্ডের সাথে আলাপ করিলে,তিনি জানান আঃ হাই নাম আমি শুনেছি, কিন্তু আজ এমন ঘটনা ঘটেছে তা জানি না।আমি আগামীকাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করিবো, প্রয়োজনে ঘটনা স্থান পরিদর্শন করিবো।
বিগত দিনের অভিযোগ ঃ-গত ৪/১১ ২১ খ্রিস্টাব্দ ইউপি সদস্য আঃ হাইয়ের বিরুদ্ধে তার দ্বিতীয় স্ত্রী চাম্পা বেগম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করে এবং গত ১১/১১/২০ খ্রিস্টাব্দ মান্দারকান্দি গ্রামের মোঃ আবদুল্লাহ মেম্বারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছিল, অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, মোঃ আবদুল্লাহ কে খুন করার জন্য মেম্বার উঠেপড়ে লেগেছিলেন।তারপর গ্রাম্য সালিশে সমাধান করা হয়েছে।
কে সে বাদল? গ্রামের একাংশ ও সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও ছামাদুল হক চৌধুরীর নিকট সাংবাদিক পরিচয়ে বাদলের বিভিন্ন চাঁদাবাজির বিষয়ে জনগণ অবগত করিলে,ছামাদুল হক চৌধুরী নবীগঞ্জ প্রেসক্লাব ও নবীগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের কয়েক নেতৃবৃন্দ কে ফোনে ও সরজমিনে বাদলের পরিচয় জানতে চাইলে, তারা জানান, নবীগঞ্জে বাদল নামে কোন সাংবাদিক আমাদের জানা নেই। বাদলের সাথে কথা বললে,জানায় আমি অল বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার ও হিউম্যান রাইট বিভাগীয় কমিটিতে,তখন একটি ঝিনাইদহ জেলার একটি লোকাল অনলাইন পোর্টালের কার্ড বের করে দেখায়,পোর্টালের নাম ক্রাইম তালাশ।অনলাইন তল্লাশি করে পোর্টালের দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তিকে প্রশ্ন করা হয় একটি লোকাল পোর্টালে কিভাবে অন্য জেলায় উপজেলা প্রতিনিধি দেওয়া হয়? তিনি জানান, আমি তল্লাশি করে দেখিতেছি।সাংবাদিক হলে আগে লোকাল পত্রিকা থেকে কাজ শুরু করবে, এটাই নিয়ম,এক জেলা থেকে অন্য জেলার কার্ড দিয়ে সাংবাদিক দাবি করলেই, সাংবাদিক হওয়া যায় না,তা ভূয়া সাংবাদিক হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি